আশরাফুল নয়ন, নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিসরুমে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার আপত্তিকর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এঘটনায় ৪ জুন (মঙ্গলবার) বিকেলে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী ও ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অভিভাবকের পক্ষে শেখর আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনা প্রকাশের পর শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলার বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান।
এ বিদ্যালয়টি তিনটি ইউনিয়নের শেষ সীমানায় ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় বিদ্যালয়ে তিনটি ইউনিয়ন থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবৎ অত্যন্ত নারী লোভী, অবৈধ ক্ষমতা বিস্তারকারী এবং অর্থলোভী প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছেন এবং বেশ কয়েকবার বিচারের মুখোমুখী হয়েছিলেন সে। কিন্তু কিছু অদৃশ্য শক্তির কারণে ছাড় পেয়ে বিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. রিফাত আরার সাথে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস রুমে অনৈতিক কার্যকলাপ করে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনা ঘটার পর মানেজিং কমিটির নিকট অভিযোগ দেওয়া হলেও কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
অভিযোগকারী শেখর আহমেদ বলেন, ম্যানেজিং কমিটিও একটি পুতুল কমিটি হিসেবে রয়েছে। যা বিগত কয়েক বছর যাবৎ অভিভাবকের আশা-আকাঙ্খার কমিটি গঠন হয় নাই। এমতাবস্থায় অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) এর সঙ্গে সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ রিফাত আরা’র অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি। গত দুই বছর আগে ভগবানপুর গ্রামের এক ছাত্রীকে শিক্ষা সফরে নিয়ে গিয়ে এরকম ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়। পরে মান – সম্মানের ভয়ে ওই ছাত্রীর অভিভাবক তরিঘড়ি বাল্য বিয়ে দেয়। গতবছর বসন্তপুর গ্রামের এক ছাত্রীর সঙ্গে একই ঘটনা । ওই ঘটনায় মেয়ের পরিবার মামলা করতে চাইলে ১০ লাখ টাকা দিয়ে তা বন্ধ করে। এমন বেশ কয়েকটি কর্মকান্ডের সাথে জড়িত প্রধান শিক্ষক মিঠু। আমি এলাকার একজন সচেতন মানুষ হিসাবে এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি ওই দুই শিক্ষকের যথাযথ ব্যবস্থা চাই।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রধান আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) তার অফিস রুমে চেয়ারে বসা ছিল এবং পাশের চেয়ারে বসেছিলেন সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরা। এর কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষক মিঠু চেয়ার থেকে উঠে এসে সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরার শীরের বিভিন্ন স্পর্সকাতর স্থানে হাত দেয় । উভয়ের সম্মতিতেই আপত্তিকর এমন বেশ কয়েকটি (১০টি ) ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষিকা (ইংরেজি) মোসা. রিফাত আরা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ মিথ্যে দাবী করে বলেন, কে বা কাহারা আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন জানিনা। তবে ভিডিওর বিষয়ে তিনি কোনও সঠিক উত্তর দিতে পারেনাই।
এবিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) এর মুঠোফোনে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি এবং বুধবার তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক (ডিসি) খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, অভিযোগটি এখনো আমার হাতে আসেনি। হাতে এলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

