আবদুল কাদির :
দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রায় এক বছর আগে রাস্তার মাটি কুড়ে রাখা হয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী তিন মাস আগে এ রাস্তার কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ না হওয়ায় বেড়েছে জনদুর্ভোগ। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেহাল এ রাস্তায় চলছেনা কোন যানবাহন। জমে থাকা পানি আর কাদা মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে লোকজনকে। পরিবহণের অভাবে উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে না পারায় কৃষকরা বিপাকে। এতে স্কুলগামী শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ এবং রোগীদের চলাফেরায় সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে।
ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার মাওহা থেকে মৈশহাটির রাস্তার চিত্র এটি। এদিকে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মন্তব্য টাকা নেই বলে কাজ করাতে পারছেননা তিনি।
উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে,এলজিডি’র (এমআরআইডিপি) প্রকল্পের আওতায় উল্লেখিত এলাকায় প্রায় দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তা পাকাকরনে ২কোটি ৮৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬২৬শ টাকায় কাজটি পান নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর এলাকার ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান। কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ শুরু করার তারিখ ০৫/০২/২০২৪ইং এবং শেষ করার তারিখ ০২/০১/২০২৫ইং।
স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় এক বছর পূর্বে রাস্তার মাটি কুড়ে বক্স কাটিং করে অর্ধেক রাস্তায় কাদামিশ্রিত বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এরপর এই রাস্তার আর কোন কাজ হয়নি। ঠিকাদার বা তাদের লোকজনেরও কোন খোঁজখবর নেই। এখন বৃষ্টির জমে থাকা পানি ও কাদায় রাস্তাটি চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছেনা কোন যানবাহন। কৃষকদের উৎপাদিত ধান ও অন্যান্য ফসল বাজারে বিক্রি করতে পারছেনা।
গৌরীপুর উপজেলার সঙ্গে নেত্রকোনার সদর উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের সংযোগ রাস্তা এটি। প্রায় ১৫/২০টি গ্রামের মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে।
রাস্তাটির বেহাল অবস্থায় বর্তমানে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় লোকজনের।
স্থানীয় মো. কুরশেদ আলি জানান, ধান কেটে ক্ষেতের পাশেই রেখে দেওয়ার ফলে নষ্ট হচ্ছে।১ কোন বেপারীও আসেনা ধান কেনার জন্যে। রাস্তা দেখেই চলে যায়। গরুর জন্যে যে খড় শুখাব তারও কোন অবস্থা নেই, আগে ত রাস্তায় শুকাইতাম। এখন রাস্তায় পচতেছে।
তিনি আরও জানান, বৃষ্টি এলেই হাটু সমান পানি জমে যায়, জরুরী প্রয়োজনে একজন রোগি নিয়ে যে ডাক্তারের কাছে যাব তারও কোন সুযোগ নেই। আমরা এলাকাবাসী খুব বিপদেই আছি।
রামকৃষ্ণপুর গ্রামের মো. রতন জানান, রাস্তায় যে বক্স কেটে বালু দেওয়া লাগে তার বদলে দিয়েছে মাঠি, ৫ ভাগের ৩ ভাগও বালু দেয়নি। ধান সহ উৎপাদিত ফসল নিয়ে আছি বিপাকে। ১ হাজার টাকার মন ধান বিক্রি করা লাগছে ৭-৮শ টাকা। বাড়ীতে কোন মেহমানও আসেনা এখন।
তিনি আরও জানান, দ্রুত এই রাস্তা মেরামত দাবি জানাই। যদি মেরামত না হয় গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে আমরা নিজ উদ্যোগে এই রাস্তা চলাচল করার উপযোগী করা ছাড়া এখন আর কোন উপায় দেখছিনা।
এবিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট রাস্তার ঠিকাদার মো. সারোয়ার জাহান গণমাধ্যমকে জানান
তিনটি ভিন্ন মন্তব্য করেন, আমার কাছ থেকে যে ঠিকাদার কাজটি নিয়েছিলেন, ৫আগস্টের পর তার নামে বেশকয়েকটি মামলা হওয়ায় তিনি এখন বাড়ী ছাড়া এ জন্যে সমস্যা হয়েছে। এর পরেই বলেন মালামাল সঙ্কটের কারনে কাজটি করা যাচ্ছেনা। সর্বশেষ মন্তব্যে বলেন, বিল না পাওয়ায়,ঠিকাদারের টাকা নেই তাই কাজ করাতে পারছিনা।
এব্যাপারে জানতে চাইলে গৌরীপুর উপজেলা প্রকৌশলী অসিতবরণ দেব জানান, ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্যেও কাজটি সম্পন্ন করেনি তাই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে কর্তৃপক্ষে জানানো হয়েছে।

