নিজস্ব সংবাদদাতা: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খোকন মিয়া (৫৫) নামের এক ইজিবাইক চালককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বিল্লাল হোসেন বাদী হয়ে নৌবাহিনীর সদস্য ও স্থানীয় ছাত্রদল নেতাসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫–৬ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ ইতিমধ্যে এজাহারভুক্ত আসামি সোহাগ মিয়া (২৫) ও জোসনা আক্তার বেলি (৩৫)-কে গ্রেফতার করেছে।

শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার মগটুলা ইউনিয়নের কর্মা গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। খবর পেয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এর মাধ্যমে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গুরুতর আহত খোকন মিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত খোকন মিয়া স্থানীয় কছুমদ্দিনের ছেলে।

এজাহার সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিনের জমি বিরোধকে কেন্দ্র করে খোকন মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষ। চাচাতো ভাই নজরুল ইসলাম (২৮), বদর উদ্দিন আলসানি বাদল (৪৫), মঞ্জু মিয়া (৩৫), মোসলেম উদ্দিন (৫৫), একলাস চৌধুরী (৪০), রাসেল মিয়া, হানিফ মিয়া, সাকিবসহ ১০–১৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খোকনের ওপর হামলা চালায়। হামলার পর তারা বাড়িঘর লুটপাটও করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পরিবারের।

নিহতের বাবা কছুমদ্দিন জানান, “নজরুল ইসলাম তার ভাইদের নিয়ে আমার ছেলেকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমার ছেলের বাম হাত কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করেছে, মাথায় তিনটি কোপ দিয়েছে, দুই পা ভেঙে থেঁতলিয়ে ফেলেছে। আমি আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই।”

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী নিহতের ভাতিজা তরিকুল ইসলাম (১৮) বলেন, “আমি দেখি নজরুল ১০–১৫ জনকে নিয়ে খোকন চাচার ওপর হামলা করছে। আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও মারতে উদ্যত হয়। প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালাই।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মামলার আসামিদের মধ্যে বদর উদ্দিন আলসানি বাদল বর্তমানে নৌবাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন। অপর আসামি নজরুল ইসলাম মগটুলা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য নিতে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্তদের বাড়ি তালাবদ্ধ পাওয়া গেছে এবং মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, “৯৯৯-এ কল পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং গুরুতর আহত অবস্থায় খোকন মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।”