জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘শাপলা’, ‘সাদা শাপলা’ অথবা ‘লাল শাপলা’ প্রতীককে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করে দলটির অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। দলটির দাবি, শাপলা জাতীয় ফুল হলেও এটি জাতীয় প্রতীক নয় এবং নির্বাচন কমিশনের ব্যাখ্যায় কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠানো এক লিখিত চিঠিতে এনসিপি জানায়, তারা নিবন্ধনের সব শর্ত পূরণ করেছে এবং জনগণের মাঝে শাপলা প্রতীক নিয়ে ব্যাপক পরিচিতি ও আবেগ তৈরি হয়েছে। দলটির ভাষায়, “শাপলা প্রতীক এখন এনসিপি ও সাধারণ মানুষের মধ্যে এক আত্মিক সম্পর্কের প্রতীক।”
এনসিপি কমিশনের আগের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করে বলেছে, বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক একটি নির্দিষ্ট নকশায় আঁকা, যেখানে চারটি উপাদান রয়েছে—শাপলা, ধানের শীষ, পাটপাতা ও তারকা। অথচ নির্বাচন কমিশন বিএনপিকে ‘ধানের শীষ’ এবং জেএসডিকে ‘তারা’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছে। এমনকি জাতীয় ফল ‘কাঁঠাল’ এবং ‘সোনালী আঁশ’ও অন্য দলকে দেওয়া হয়েছে। তাই শাপলাকে বাদ দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।
এছাড়া, ৩ আগস্টের বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার দাবি করেন, কিছু গোয়েন্দা সংস্থার লোগোতে শাপলার উপস্থিতির কারণে এনসিপিকে এ প্রতীক দেওয়া সম্ভব নয়। এনসিপির মতে, এ যুক্তি “অপ্রাসঙ্গিক, পক্ষপাতদুষ্ট ও বৈষম্যমূলক।” দলটি উদাহরণ টেনে বলেছে, পুলিশের লোগোতেও ‘ধানের শীষ’ রয়েছে, অথচ বিএনপিকে সে প্রতীক দেওয়া হয়েছে; বিমান বাহিনীর লোগোতে ঈগল থাকলেও এ বি পার্টিকে ঈগল প্রতীক দেওয়া হয়েছে; সুপ্রিম কোর্টের লোগোতেও দাড়িপাল্লা রয়েছে, যা জামায়াতের প্রতীক।
চিঠিতে এনসিপি অভিযোগ করেছে, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের চাপের কাছে নতিস্বীকারের বহিঃপ্রকাশ। দলটি বলেছে, একটি শক্তিশালী দল যাতে এনসিপিকে শাপলা প্রতীক না পেতে দেয়, সে জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে এবং কমিশনের অবস্থান সেই তৎপরতারই ফল।
এনসিপি কমিশনকে জানিয়েছে, তারা শাপলা, সাদা শাপলা বা লাল শাপলা—এই তিনটির যেকোনো একটি প্রতীক হিসেবে গ্রহণে আগ্রহী। প্রয়োজনে প্রতীকের নকশা ও রঙ নিয়েও আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে।
চিঠির শেষে এনসিপি আশা প্রকাশ করেছে, কমিশন একরোখা অবস্থান থেকে সরে এসে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে শাপলা প্রতীককে তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করবে এবং তাদের অনুকূলে বরাদ্দ দেবে।